বাংলাদেশী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের আজ পর্যন্ত (৩১/১২/২০২১) বর্তমানে প্রায় ১০৮ টি বেসরকারি ও ৩ টি আন্তর্জাতিক বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। প্রথম অনুমোদন প্রাপ্ত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ১৯৯২ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যার পরিক্রমায় খুব কম সময়ে ১৬ কোটি মানুষের কিন্তু ক্ষুদ্র এইদেশে দ্রুত এতগুলো বিশ্ববিদ্যাল প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যারা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে নিতে চান তাদের প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে নতুন শিক্ষক হিসেবে কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পাওয়া। তবে বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচন করবেন কিভাবে? - এই সমস্যায় অনেকেই ভোগেন। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেখার পর নিম্নোক্ত কাজগুলো করলে আপনার অনেক নিয়োগ পরীক্ষা অংশগ্রহণ করতে সহযোগিতা করবে।
১) প্রথমেই ইউজিসির ওয়েবসাইট থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাথমিক তথ্য জেনে নিন। অনুমোদন আছে কিনা? বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সমস্যা আছে কিনা?
২) প্রায় কোন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই তাদের স্যালারী বিন্যাস বিজ্ঞপ্তিতে জানায় না। এক্ষেত্রে কোন আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের এলমনাই যিনি ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ে চাকুরী করেছেন বা করছেন তাদের কাছ থেকে ধারনা পেতে পারেন। একান্তই না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট থেকে উক্ত ডিপার্টমেন্টের ওয়েবসাইট থেকে কর্মরত শিক্ষকদের যোগাযোগের উপায় খুঁজে বের করে জেনে নিতে পারেন, যদিও এটা শিষ্টাচার বহির্ভূত। কোন রেফারেন্স খুঁজে যোগাযোগ করলে হয়ত এক্ষেত্রে বিড়ম্বনায় পড়তে হবে না। যেমনঃ শিক্ষা ও গবেষনার বিভিন্ন সংগঠন থাকে, যেগুলোর সদস্য হয়ে রেফারেন্স খুঁজতে পারেন। আরেকটি উপায় হচ্ছে Glassdoor ওয়েবসাইট। যেখানে বাংলাদেশের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যালারী স্ট্রাকচার দেয়া আছে।
৩) বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ফুলটাইম পোষ্টগুলোতে শুরুতে ১০ হাজার থেকে ১ লাখ পর্যন্ত স্যালারী দিয়ে থাকে। আপনার যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এগুলো চিন্তা করে তারপর সিদ্ধান্ত নিন নিয়োগ পরীক্ষা দেয়ার জন্য। আপনি যত দক্ষ বা জ্ঞানী হউন না কেন বিশ্ববিদ্যালয় গভর্নিং বডি তাদের অঘোষিত স্যালারী স্ট্রাকচার থেকে খুব বেশী অফার করবে না।
৪) বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন মাসের কত তারিখে দিয়ে থাকে তা নিয়েও খোঁজ নিতে পারেন। অনেকেরই এই বিষয়ে সমস্যা হয়ে থাকে।
৫) বিশ্ববিদ্যালয়ে Work Load জেনে নিবেন। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩-৪ টা কোর্সের দিয়ে থাকে আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮-১০ টা কোর্স দিয়ে থাকে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষনার পর্যাপ্ত পরিবেশ প্রদান করে আবার অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে আপনাকে গবেষনার কোন গন্ধতো পাবেনই না বরং অতিরিক্ত আরও অনেক দায়িত্ব প্রদান করে নির্জীব করে দিবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকতায় লাইফ লাইন হচ্ছে আপনার দক্ষতা উন্নয়ন ও গবেষনা - এই সুযোগ কতটুকু পাবে তা বাছবিচার করাই শুরুতেই জরুরী।
৬) কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্যালারী হুটহাট কেঁটে ফেলে। কর্মঘন্টার মারপ্যাঁচে জীবন বিষাদময় হয়ে যেতে পারে। আবার অভ্যন্তরীন রাজনীতিও চলে। এগুলো খোঁজখবর নিতে পারেন।
৭) কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঙ্ক্রিমেন্ট ও বোনাসের কোন বালাই থাকে না। আবার যৎসামান্য কিছু দেয়। আপনার চাহিদাগুলো নিয়ে ভেবে নিয়োগ পরীক্ষা দিবেন।
৮) কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে সার্টফিকেট জমা রাখে নিজেদের সিকিউরিটর জন্য। যদিও অনেক জায়গায় তুলে ফেলা যায়। বিষয়গুলো জেনে গেলে ভালো হয়।
৯) বিশ্ববিদ্যালয় স্থান নিয়েও অনেকের সমস্যা হতে পারে। পরিবহন ব্যবস্থা নিয়েও হতে পারে । বিশ্ববিদ্যালয়ের সান্ধ্যকালীন কোর্সগুলো সময় এক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নিতে সহযোগীতা করতে পারেন।
১০) কোন কোন বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে অন্য কোন প্রতিষ্ঠানে খন্ডকালীন চাকুরীকে সাপোর্ট করে না। প্রয়োজনে এটাও বিবেচনায় নিতে পারেন ।
১১) কিছু কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আপনাকে বিভিন্ন কনফারেন্স বাবদ যাতায়াত ভাতা প্রদান করে থাকে। এগুলোর খোঁজ নিতে পারেন।
১২) নির্দিষ্ট ডিপার্টমেন্টের বয়স আর ছাত্রছাত্রী সংখ্যা ও কোর্সগুলোও বিবেচনায় নিতে পারেন।
১৩) বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষকদের প্রোফাইল বিবেচনায় নিতে পারেন। কারন, কর্মক্ষেত্রে সহযোদ্ধা কে তা অনেকের কাছেই গুরুত্বপূর্ণ।
শুধু নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহনই যদি প্রধান উদ্দেশ্য হয়ে থাকে, উপরের সবগুলো পয়েন্ট অবজ্ঞা করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশগ্রহন করাই শ্রেয়।
No comments:
Post a Comment
Thanks for your comment.